ঢাকা,সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪

পেকুয়ায় ধর্ষিতা মাদ্রাসা ছাত্রীকে কক্সবাজারের হোটেল থেকে উদ্ধার

পেকুয়া প্রতিনিধি :: কক্সবাজারের পেকুয়ায় মাদ্রাসা ছাত্রীকে বিয়ের প্রলোভনে ধর্ষণের অভিযোগ পাওয়া গেছে। ওই ছাত্রীকে কক্সবাজারের একটি হোটেল থেকে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ইউপি সদস্যরা উদ্ধার করে। এ দিকে ধর্ষক ও ধর্ষিতা মাদ্রাসা ছাত্রী পরষ্পর প্রতিবেশী। বিষয়টি নিষ্পত্তির জন্য বৈঠক হয়েছে। বিয়ে পড়িয়ে ওই ছাত্রীকে স্ত্রী হিসেবে মর্যাদা দিতে হবে এমন সিদ্ধান্তে উপনীত হয়। তবে ধর্ষণ কান্ড ও বিয়ে এড়িয়ে যেতে ধর্ষক এখন সটকে পড়ার পাঁয়তারা করছে।

১৬ সেপ্টেম্বর রাত ২ টার দিকে কক্সবাজারের লাবণী পয়েন্টের একটি আবাসিক হোটেল থেকে ওই ছাত্রীকে উদ্ধার করা হয়েছে। ওই ছাত্রীর বাড়ি উপজেলার রাজাখালী ইউনিয়নে।

স্থানীয়রা জানান, গত ৩ বছর আগে থেকে মাদ্রাসার অধ্যয়রত ৮ম শ্রেনীর ছাত্রী ও রাজাখালী ইউনিয়নের ২ নং ওয়ার্ডের মিয়ার পাড়ার আবদুল করিম প্রকাশ করিম খলিফার ছেলে মো: শেখ সাঈদীর মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক হয়। মন দেয়া নেয়ার এক পর্যায়ে প্রেমিক জুটি গভীর সম্পর্কে জড়িয়ে যান। ২ বছর আগে শেখ সাঈদী নামের ওই ছাত্রীর প্রেমিক সৌদি আরবে চলে যায়। তবে ২ জনের মধ্যে ঠিকই যোগাযোগ ও সম্পর্ক ছিল। বিদেশ যাওয়ার আগে প্রেমিক জুটি শারীরিক সম্পর্কে জড়ান।

চলতি বছরের রমজানে শেখ সাঈদী দেশে আসে। ১৬ সেপ্টেম্বর শেখ সাঈদী নামক প্রবাসী যুবক তার প্রেমিকাকে নিয়ে সকালে রাজাখালী থেকে বের হন। তারা দুইজন বিয়ের পিঁড়িতে বসবেন এ বলে ওই ছাত্রীকে বাড়ি থেকে নিয়ে যাওয়া হয়। দুপুরের দিকে তারা কক্সবাজারে গিয়ে লাবণী পয়েন্টে একটি হোটেলে উঠেন। সেখানে ওই ছাত্রীকে বিয়ের প্রলোভনে ধর্ষণ করা হয়।

ছাত্রীর মা জানান, আমার মেয়ে সহজ সরল। সরল মনে তাকে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। এরপর কক্সবাজারের হোটেলে মেয়েকে বিয়ের কথা বলে ধর্ষণ করা হয়। আমার মেয়েকে ধর্ষণের পর নগ্ন করে ছবি মুঠোফোনে ধারণের চেষ্টা করা হয়। পরিস্থিতি আঁচ করতে পেরে আমার মেয়ে হোটেল কর্তৃপক্ষের সহযোগিতা চায়। এরপর তারা বিষয়টি ডিবি পুলিশকে জানান। ডিবি পুলিশ এসে আমার মেয়েকে হোটেল থেকে উদ্ধার করে। এরপর বিষয়টি ছেলের নিকটাত্মীয় ও আমাদেরকে জানানো হয়। ছেলের মা কমরুন্নেছা ও স্থানীয় ইউপি সদস্য নেজাম উদ্দিন নেজু এমনকি টইটং ইউপির সাবেক সদস্য শাহাদাতসহ ৪/৫ জন গিয়ে বিয়ে পড়ানোর কথা বলে আমার মেয়েকে রাজাখালীতে নিয়ে আসে।

মাদ্রাসা ছাত্রী জানান, আমি ক্ষতিগ্রস্ত। প্রতারিত হয়েছি। বিয়ের কথা বলে আমাকে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। এরপর হোটেলে গিয়ে আমার সাথে ধস্তাধস্তি করে। দুপুর থেকে গভীর রাত পর্যন্ত ভীতিকর অবস্থা। আমাকে অনিচ্ছাকৃতভাবে ধর্ষণ করে। আমি পুলিশের সহযোগিতা চেয়েছিলাম। হোটেল থেকে আমাকে ডিবি পুলিশের সহযোগিতা দেয়া হয়েছে। আমাকে নগ্ন করতে পরণের কাপড় ছোপড় টানা হ্যাচড়া করে। তার দৃস্টিভঙ্গি ছিল নগ্ন অবস্থায় ছবি ধারণ করবে। এ ছবি নিয়ে আমাকে ব্ল্যা ক মেইল করবে। আরবশাহ বাজারে রবিবার দুপুরে নেজু মেম্বারের অফিসে বৈঠক হয়েছে। বিয়ের সিদ্ধান্ত হয়েছে। তবে ইউপি সদস্যের ভূমিকা ও দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে আমার সন্দেহ তৈরী হয়েছে। সর্বনাশ করে যারা আমার বিচার নিয়ে ষড়যন্ত্র করবে আমি এদের বিচার এ সমাজ ব্যবস্থা ও বিবেককে দিয়ে যাবো।

মহল্লা কমিটির সভাপতি মাওলানা আবদুল করিম বলেন, আমরা বৈঠক করেছি। কিছু কাগজপত্রও মেম্বারের কাছে সংরক্ষণ আছে। আসলে বিয়ে পড়িয়ে দিলে ভাল হবে বলে আমি মনে করছি।

ইউপি সদস্য নেজাম উদ্দিন নেজু জানান, বিয়ে পড়াতে সিদ্ধান্ত হয়েছে। আগামী রবিবার বৈঠক আছে। সেখানে চুড়ান্ত সিদ্ধান্ত হবে। না হলে মেয়ে সর্বোচ্চ আইনী সহায়তার জন্য পদক্ষেপ নিতে পারবে।

পাঠকের মতামত: